ওয়ারেন, ৩ জুন : গতকাল রোববার নগরীর শিব মন্দির টেম্পল অব জয়ে যুগাবতার শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর বাবার ১৩৪ তম তিরোধান দিবস নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে পূজা-অর্চনা, কীর্তন, গীতা পাঠ, বাল্যভোগ, রাজ্যভোগ, প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
সকালে বাল্য ভোগ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২টায় পূজার্চনা শেষে মন্দিরের প্রিস্ট পূর্নেন্দু চক্রবর্তী অপুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয় গীতাযজ্ঞ। পরে শ্রীশ্রী লোকনাথ বাবার অষ্টোত্তর শতনাম পাঠ করেন ভক্তরা। গীতাযজ্ঞ শেষে গানের সাথে আরতিতে অংশ নেন নারীরা।
অনুষ্ঠানে শিশু শিল্পী অতনু আচার্য্য দুটি ধর্মীয় গান পরিবেশন করে। তার গানে মুগ্ধ সকলেই। এক সপ্তাহ আগে অতনু অভিবাসী ভিসায় বাবা অমল আচার্য্য ও মায়ের সাথে বাংলাদেশ থেকে মিশিগানে আসে। যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর অতনুর এটাই প্রথম পারফরমেন্স। সে ওয়ারেন সিটির বাসিন্দা অরুন আচার্য্যের ভাতিজা। অঞ্জলি প্রদান শেষে, উপস্থিত ভক্তদের মধ্য প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তিরোধান দিবস উপলক্ষে সকাল থেকেই মন্দিরে ছিল দর্শনার্থীদের ভিড় ।
লোকনাথ বাবা শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন জন্মাষ্টমীর দিন ১৭৩০ খ্রিষ্টাব্দে (১৮ ভাদ্র, ১১৩৭ বঙ্গাব্দ) কলকাতা থেকে কিছু দূরে চৌরাশি চাকলা নামক গ্রামে একটি ব্রাহ্মন পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম রামনারায়ন ঘোষাল। এবং তাঁর মাতা কমলাদেবী। তিনি ছিলেন তাঁর বাবা মায়ের চতুর্থ পুত্র।
ছোটবেলা থেকেই লোকনাথ ছিলেন খুবই দুষ্টু। তিনি লেখাপড়ার সঙ্গে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, শাস্ত্র এসব পাঠ করতেন। লোকনাথের বয়স যখন এগারো বছর, তখন বাবার আদেশ অনুযায়ী তিনি ভগবান গাঙ্গুলীর কাছে সন্ন্যাসের দীক্ষা নিলেন। ভগবান গাঙ্গুলী ছিলেন নিষ্ঠাবান সর্বশাস্ত্রজ্ঞ এক পন্ডিত। তিনি লোকনাথ ও তাঁর সঙ্গী বেণীমাধব বন্দোপাধ্যায়ের উপনয়ন কার্য সম্পন্ন করে তাঁদের নিয়ে গৃহত্যাগ করেন।
গৃহত্যাগের পর কিছু দিন ব্রত পালনের পর লোকনাথ চলে যান হিমালয়ে। দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি বরফের উপর কঠোর সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন। এই সাধক ভারতসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের পর দীর্ঘ ২৬ বছর বাংলাদেশের নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদীতে অবস্থান করেন। ১৫০ বছর বয়সে ১৯ জ্যৈষ্ঠ তিনি বারদীতে দেহত্যাগ করেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan